প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও নয়া দিগন্তের বিএনপি প্রীতি

সরকারের বিপক্ষের কোনো সংবাদ পেলেই তাতে রং মেখে গণমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়াতে ওস্তাদ দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও নয়া দিগন্ত। তবে বিএনপি বিরোধী কোনো সংবাদ পেলেই চুপসে যায় পত্রিকাগুলো। খালেদা জিয়া কিংবা তারেক রহমানের দুর্নীতি অথবা বিএনপি সমর্থক যে কেউই কুকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকলে তা কোনো এক অজানা রহস্যের কারণে  এই তিন পত্রিকায় ফলাও ভাবে প্রচার করতে চায় না।

অপরদিকে সরকারকে বিব্রত করে, এমন যে কোনো সংবাদকে মুহূর্তে শিরোনাম বানাতে দেরি করে না এই তিন পত্রিকা। মূলধারার গণমাধ্যম হিসেবে দাবি করলেও দীর্ঘদিন ধরে এই পত্রিকাগুলোর বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াতের তাঁবেদারি করার অভিযোগ রয়েছে।

১৫ এপ্রিল ৩৩০ কেজি চালসহ বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মাঝিহট্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান মির্জা গোলাম হাফিজকে আটক করে পুলিশ। তবে এই শিরোনামে কোনো সংবাদ প্রথম আলো, ডেইলি স্টার কিংবা নয়া দিগন্তে স্থান পায়নি। যদিও আওয়ামী সমর্থক কোনো অপরাধী চাল চুরি করলে আওয়ামী লীগকে জড়িয়ে রসালোভাবে সংবাদ উপস্থাপনে কোনো কমতি থাকে না এই পত্রিকাগুলোর। বিএনপি নেতার চাল চুরির সংবাদটি প্রচার করতে গিয়ে প্রথম আলোর শিরোনাম ছিলো ‘শিবগঞ্জে সরকারি চালসহ ইউপি চেয়ারম্যান আটক’। নয়া দিগন্তের শিরোনাম ছিলো ‘শিবগঞ্জের মাঝিহট্ট ইউপি চেয়ারম্যান ভিজিডির চালসহ গ্রেফতার।’ ডেইলি স্টারের শিরনাম ছিলো ‘বগুড়ায় ওএমএস’র ৩৩০ কেজি চালসহ ইউপি চেয়ারম্যান আটক।’ এমন শিরোনাম দেখে অনেকেই মনে করতে পারেন হয়তো অভিযোগটি আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে কিন্তু সংবাদের শেষে গেলে বোঝা যায়, চাল চুরি করা ব্যক্তিটি বিএনপি সমর্থন করে।

এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিভুরঞ্জন সরকার বলেন, প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও নয়া দিগন্ত বর্তমানে হলুদ সাংবাদিকতার পর্যায়ে চলে গেছে। শুধু মাত্র একটি পক্ষকে বিব্রত করে অন্য পক্ষকে জন সাধারণের সামনে তুলে ধরে তাদের ইমেজের উন্নয়ন ঘটিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্যই এ তিন পত্রিকা এমন কাজ করে থাকে। মূলত সরকার বিরোধী এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্যই তারা এমনটি করে থাকে। যা নিতান্তই নিন্দনীয়।

বিষয়টিকে ভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা করে রাজনৈতিক বিশ্লেষক এ আরাফাত বলেন, সংবাদপত্র সব সময় জনমানুষের কল্যাণে সত্য প্রচারের কাজে নিয়োজিত থাকার কথা। কিন্তু কোনো পত্রিকা যদি তা না করে কোনো একটি দলের হয়ে কাজ করে, তা নিতান্তই সাংবাদিকতা নীতির পরিপন্থী। এমন সংবাদপত্রকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ না বলে, রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি বলাই শ্রেয়। নয়া দিগন্ত, ডেইলি স্টার ও প্রথম আলো বিএনপি সমর্থিত চাল চোর চেয়ারম্যানের পরিচয় প্রকাশ করেনি। অথচ আওয়ামী লীগের কোন চেয়ারম্যান, মেম্বার বা কোন নেতা চাল নিয়ে নয়ছয় করলেই এই তিন পত্রিকা একদম বিস্তর তথ্য দিয়ে খবর প্রকাশ করছে। যা প্রমাণ করে, এই তিন পত্রিকা হয়তো বিএনপি-জামায়াতের কাছে বিক্রি হয়ে গেছে।

এর আগে, প্রথম আলো পত্রিকার অনুষ্ঠানে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছিলো রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরার। অনুষ্ঠানে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে সেই লক্ষ্যে আবরারের বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হবার ঘটনা কনসার্ট চলাকালীন পুরো সময় জুড়ে গোপন রাখে প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ। ছেলেটি মারা গেলেও তাদের গাফিলতি স্বীকার করে কোনো সংবাদও সে সময় প্রচার করেনি তারা।